আমরা জম্মের পর থেকে নিজের জীবন গড়তে গড়তে ভুলে যাই আমরা প্রকৃতি অংশ বই কিছুনা। আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ তথাঃ শিক্ষা, চাকুরী বা ব্যবসায়, সন্তানের ভবিষ্যত গঠনের চিন্তায় জীবনের আয়ু শেষ করে ফেলি। জীবনকে উপভোগ করা হয়না। যদিও একজন হাসিখুশি মানুষ বহুগুণ কার্যকরী তার কাজে। তার মস্তিস্ক সঠিকভাবে ও নিখুঁত কাজ করে। নিজেকে প্রকৃতিতে সমর্পন করা, প্রকৃতির বিশালতা ও মনোমুগ্ধকর আবহ অবলোকন করা উচিৎ। এতে দেহ ও মনে প্রানচাঞ্চল্যতা আসে, যেমনটি ফিরে আসে কর্মব্যস্ততার মাঝে ছুটির অবকাশের পরে। “বেঁচে আছি আমি” এই বিস্ময়ে উল্লাসিত হওয়া উচিৎ প্রতিদিন ঘুম থেকে জেগে। কারণ আবার দ্বিতীয়বার ফিরবনা এ ধরাতে। বিচরণ করা উচিৎ বনের গাছ-গাছালির বেঁচে থাকার অপুর্ব সাধনা দেখে। উপলব্ধি করা উচিৎ কিভাবে চঞ্চল ছোট্ট পাখি খাবার অন্বেষন করে মনের সুখে কিচিরমিচির ডাকে। অবাক চোখে দেখুন কিভাবে চিল বা মাছরাঙা পাখি বহুদূর হতে শিকার টার্গেট করে নিখুঁতভাবে গতিশীল আরেকটি প্রানীকে শিকার করে। অবাক হবেন দেখে প্রজাপতি ও মৌমাছিরা দুডানা ঝাঁপটে ফুল হতে মধু সংগ্রহ করে। দেখবেন কিভাবে গুল্ম পরগাছা বিশাল গাছে উঠে গেছে। বিস্মিত হবেন মাথা ভাঙা গাছ কিভাবে কঠিন কান্ডের মাঝে পুনরায় পাতা অঙ্কুরোদগম করে টিকে থাকার প্রচেষ্টায়।

আমরা প্রকৃতির বিশাল নিয়ামতের মাঝে বসবাস করেও নিজেকে উপভোগ থেকে বঞ্চিত করি। কারণ অবিরত ব্যস্ততার ডুবে থাকি। বিস্ময়ের নানান উপকরণের মাঝে থেকেও আমরা বিস্মিত হতে পারিনা। দুশ্চিন্তায় ও বিষন্নতায় জীবন পার করে দিই। যদি আমরা আমাদের ইন্দ্রিয়গুলোকে সর্বক্ষন স্বচেতনতার সাথে উপলব্ধি করতাম তবে বেঁচে থাকার শতস্ফুর্ততা অনেকগুন বৃদ্ধি পেত। যেমনঃ প্রতিটি বস্তুর গ্রাণ নেয়া, প্রতিটি খাবারকে শক্তির খোরাক মনে করে গুরুত্বের সাথে ভক্ষন করা, অতিন্দ্রিয় দৃষ্টি দিয়ে দেখা যা শুধুমাত্র চাহনি নয়, বনে প্রবাহমান বাতাসের ঝিরিঝিরি শব্দ, হরেক রকম পাখি ও পোকার শব্দ, আকাশে মেঘের গুড়গুড় শব্দ, সাগরে ঢেউয়ের শব্দে নিজেকে আন্দোলিত করা। প্রকৃতিই বলে দেয়- হে মানুষ তুমি আমারই সৃষ্টি, আমারই অংশ। যতই কৃত্রিমতায় অাঁকড়ে ধর ততই নিজের বৈশিষ্ট্য হারাবে। অানন্দহীন জীবন দুঃখ যাতনা ছাড়া কিছুইনা। নানান রোগ জরাক্লিষ্ট হয়ে অনিন্দন সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে যাবে।